ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত

ছোলা বাঙ্গালীদের খাদ্যভাসে অতি পরিচিত দানাদার খাদ্যশস্য। যা ইফতারে খাবার হিসেবে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার হয়।ছোলা সাধারণত ডাল জাতীয় খাদ্যশস্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। এতে প্রোটিন থাকায় একে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন নাম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ছোলা ছোলা খেলে আমাদের প্রোটিনের ঘাটতি কমে। তাই বলা যায় যে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
স্বাস্থ্যকর খাদ্যশস্য হিসেবে ছোলা বা বুটের সুনাম অনেক রয়েছে। কারণ এই ছোলা অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাদ্যশস্য। যদি আমরা এটি বেশি খেয়ে ফেলি তাহলে আমাদের জন্য উপকারের বদলে অপকারিতা বয়ে আনবে। তাই ছোলা খাওয়ার উপকারিতার পার্শ্ববর্তী তার অপকারিতাও রয়েছে।

ভূমিকা:

ছোলা সাধারণত একটি ডাল জাতীয় খাদ্যশস্য যাতে প্রচুর পরিমাণের প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং এটি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। ছোলা বা বুট সাধারণত এশিয়া মহাদেশের দিকে চাষ করা হয়ে থাকে। যেমন এশিয়া মহাদেশের মধ্যপ্রাচ্য,পশ্চিম দিকে এবং ভারত উপমহাদেশে এর বেশি চাষ করা হয়। ছোলা সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
দেশি ছোলা;
কাবুলি ছোলা;

দেশি ছোলা সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারত উপমহাদেশের দিকে বেশি চাষ করা হয়। আর কাবুলি ছোলা ইরান ইরাক আফগানিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদিতে চাষ করা হয়ে থাকে। যেহেতু ছোলাতে অনেক পুষ্টি রয়েছে সেহেতু এটি খেলে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে। তাই বলা যায় যে খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

ছোলা খাওয়ার উপকারিতা:

ছোলা যেহেতু একটি দানাদার জাতীয় খাদ্যশস্য সেহেতু সহজেই আমাদের হজম হয়ে যায়। ছোলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো-
  • ছোলাতে রয়েছে অনেক ফাইবার যা আমাদের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা থেকে আমরা বেঁচে থাকতে পারি।
  • ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের  রাফিনোজ রয়েছে যা সাধারণত ভোজ্যশস্য হিসেবে আখ্যায়িত। এটি আমাদের হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে।
  • ছোলা খেলে সেখান থেকে আমাদের শরীরের মধ্যে যাওয়ার পর বিউটারেট ফ্যাটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। যা রোগাক্রান্ত কোষগুলো ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ফলে আমাদের ক্যান্সার ঝুঁকি কমায়।
  • সরাতে রয়েছে অনেক ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং ভোজ্যআঁশ যা আমাদের হার মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে।
  • ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকায় আমাদের  ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ফলে আমরা সহজেই আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি।
  • ছোলাতে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে থাকে। তাই ছোলা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
  • ওদের রয়েছে ভিটামিন বি যা মেরুদন্ডের ব্যথা উপশম করতে ও স্নায়ু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
  • ছোলাতে যে ফলিক এসিড রয়েছে তা অ্যাজমা রোগের উপশম হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • ছোলাতে রয়েছে আমি এবং এন্টিবায়োটিক যা আমাদের সবল এবং সুস্থ শরীর গঠনে সহায়তা করে। আমাদের যৌন শক্তি বেড়ে যায়।
তাই বলে যায় যে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক, ফলে আমাদের প্রতিদিন ছোলা খাওয়া উচিত।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা:

ভাজা ছোলা খাওয়ার থেকে ভেজানো অর্থাৎ কাঁচা ছোলা খাওয়া অনেক ভালো। কেননা ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ফাইবার,প্রোটিন,ভিটামিন তবে ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও ভেজানো ছোলাতে রয়েছে ফাইবার এবং কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। যা হজম শক্তিতে সহায়তা করে এবং শর্করার মাত্রা শোষণ করে। 

ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। কারণ রক্তে যদি শর্করার মাত্রা কমে তাহলে রক্তে সুগারের মাত্রাও কমে যাবে, ফলে সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে। এজন্য ছোলা খেলে ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে সহজেই আমরা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এছাড়াও ভেজানো ছোলাতে রয়েছে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে।

ফলে সহজেই আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। ভেজানো ছোলাতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়াও কাঁচা ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানের আয়রন যা আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে তুলে।

ভেজানো ছোলা অর্থাৎ কাঁচা ছোলাতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ , জিংক এবং ম্যাঙ্গানিজ যা আমাদের চুলের সমস্যা দূর করে। অর্থাৎ চুল পড়া সমস্যা দূর করে, নতুন করে চুল গজায় এবং চুলের পুষ্টি দ্বিগুণ করে তোলে। আমাদের উচিত সকাল বেলা খালি পেটে ভেজানো অর্থাৎ কাঁচা ছোলা খাওয়া। তাহলেই আমরা এর সম্পূর্ণ পুষ্টি পাবো। তাই বলা যায় যে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

ছোলা খাওয়ার অপকারিতা:

আমাদের পৃথিবীতে কোন কিছুর উপকারিতা থাকলে পার্শ্ববর্তী তার অপকারিতাও রয়েছে। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত কোনো কিছুই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। অর্থাৎ বেশি পরিমাণে ছোলা খেলে তা আমাদের শরীরের জন্য অকল্যাণকর বয়ে আনবে।

কেননা ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। আর আমরা যদি অনেক ছোলা খাই তাহলে আমাদের শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং ফ্যাটের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। তার ফলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও কৌটা জাত ছোলা থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। কেননা এতে রয়েছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের শরীরের জন্য অপকারিতা বয়ে আনবে।

এছাড়াও যাদের ছোলাতে অ্যালার্জি রয়েছে তাদেরকে বেশি ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাই বলা যায় যে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা বেশি থাকলেও এর অপকারিতাও রয়েছে। আমাদের সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখে খাওয়া উচিত।

লেখকের শেষ মন্তব্য:

ইতিমধ্যে আমরা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা এবং তার পার্শ্ববর্তী অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। ছোলাতে যে ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার রয়েছে তা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও এটি বেশি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। কেননা বেশি খেলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত নজর রাখুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর্লিটেক বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url